
দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের অনিয়ম ও অপকর্মের নানা তথ্য বেরিয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় মাগুরাতেও কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে তৎকালীন শালিখা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং বর্তমানে মাগুরা জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিচালক মো. ইলিয়াসুর রহমানের নামটি এখন আলোচনায়।
অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার ও তার ভাই বিমল শিকদারের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে জড়িত ছিলেন তিনি। সহকর্মীদের দাবি, শালিখা উপজেলায় চাকরির শুরু থেকে দীর্ঘ সময় একই পদে থেকে তিনি নানা কৌশলে প্রভাব বিস্তার করেন এবং প্রশাসনের ভেতরে গ্রুপিং সৃষ্টি করেন।
সহকর্মীদের অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের দিকে যুব উন্নয়নের একটি প্রকল্পে একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে জাতীয়করণের সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাছাড়া, প্রশাসনের কিছু সৎ কর্মকর্তা ও পিএসসিতে উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের হয়রানি করার ঘটনাও বিভিন্ন সময় শোনা গেছে। স্থানীয়দের দাবি, এসব কর্মকাণ্ডের কারণে অফিসে অস্থিরতা ও বিভাজন তৈরি হয়েছিল।
আরও অভিযোগ রয়েছে, ইলিয়াসুর রহমান একদিকে বিমল শিকদারের প্রভাব, অন্যদিকে আত্মীয়সূত্রে এমপি শেখর সাহেবের ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে মাগুরায় প্রশাসনিক ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খানের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল বলে সূত্রে জানা যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে তিনি বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু ছাত্র সংগঠন ও সামাজিক সংগঠনকে প্রশিক্ষণ ও সুবিধা দিয়ে রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিএনপির কিছু নেতার প্রভাব ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির অভিযোগও রয়েছে।
এছাড়া, তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের সময়ে শালিখা অঞ্চলের বহু বেকার যুবকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে ওই যুবকদের অল্পসময়ের প্রশিক্ষণ শেষে সোলার প্যানেল কোম্পানিতে পাঠানো হলেও, দীর্ঘমেয়াদে কেউ স্থায়ী চাকরি না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এতে বহু পরিবার আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ইলিয়াসুর রহমানের কর্মকাণ্ড নিয়ে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। তখন আত্মীয়তা বা রাজনৈতিক ছত্রছায়া দিয়ে আড়াল করা কঠিন হবে বলে তাদের মন্তব্য।