
আশরাফুল ইসলাম আসাদ মণ্ডল
বিশেষ সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহ প্রেস ইউনিটে আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলন করেন এসিড নিক্ষেপের শিকার মোছাঃ নাসিমা খাতুন। নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি ঝিনাইদহে এসে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বলে জানান।
চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নাসিমা খাতুন অভিযোগ করেন, ১৭ বছর আগে একই গ্রামের মোঃ ফারুক হোসেনের সঙ্গে তার বিবাহ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ১৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিবাহের পর থেকেই স্বামী যৌতুকের জন্য তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে।
নাসিমা খাতুন জানান, নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে তিনি স্বামীকে দুই লক্ষ টাকা দেন। এরপরও স্বামীর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে পুনরায় যৌতুকের টাকা দাবি করলে অস্বীকার করায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে চিকিৎসা শেষে তিনি চুয়াডাঙ্গা বিজ্ঞ আদালতে তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা (নম্বর–২৩২/২৫) দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর থেকেই স্বামী ফারুক হোসেন তাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। থানায় অভিযোগ করলেও আসামির প্রভাবের কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নাসিমা খাতুন জানান, মামলা না তোলায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৬ নভেম্বর রাতে স্বামী ফারুক তার ওপর এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এসিড তার পেটে, পরনের কাপড়ে ও শরীরের পাশের অংশে লেগে ঝলসে যায়। তবে সরে যাওয়ায় তার মুখ অক্ষত থাকে।
এ ঘটনার পরও জীবননগর থানায় মামলা গ্রহণ না করায় তিনি এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা (নম্বর–০১/২০২৫) দায়ের করেন। মামলার পর থেকে আসামি বিভিন্ন মাধ্যমে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নাসিমা খাতুন আরও বলেন, ‘‘স্বামীকে তালাক দেওয়ার পরও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আমি সংসার করছিলাম। কিন্তু সে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এসিড নিক্ষেপ করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’
ভুক্তভোগী নাসিমা খাতুন তার ও সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।