
মোহন আলী,স্টাফ রিপোর্টার,কুষ্টিয়া ঃ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের কাজিপুর মৌজায় প্রায় ৩১ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে অবশেষে রায় কার্যকর করে নিজেদের পৈতৃক জমির দখল পেয়েছেন মৃত আফজাল মালিথার ছেলে শফিকুল ইসলাম। ৯ একর ১৩ পয়েন্ট জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এই মামলা, যার নম্বর ৪৬৯৪।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মামলাটির বাদী ছিলেন মৃত আফজাল মালিথা। ১৯৯৭ সালে তাঁর মৃত্যুর পর বড় ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করে আসছিলেন। দীর্ঘ এ বিচারপ্রক্রিয়ার অবসান ঘটে গত ১৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে আদালত রায়ে মামলাটি নিষ্পত্তি করলে এবং পরবর্তীতে ১৬ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কুষ্টিয়া জেলা আদালতের দৌলতপুর সহকারী জজ চৌকি আদালতের সিনিয়র সহকারি জজ মোঃ সাইফুল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন।
রায় কার্যকর হওয়ার পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে শফিকুল ইসলাম ২২ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে জমির দখল গ্রহণ করেন। মোট ৯ একর ১৩ পয়েন্ট জমির মধ্যে ৫ একর ১৬ শতক ৫০ পয়েন্ট জমির বাস্তব দখল পান তিনি।
দীর্ঘ এ সংগ্রামের পথে ভয়াবহ মূল্যও দিতে হয়েছে পরিবারটিকে। শফিকুল ইসলাম জানান,
“এই জমির মামলার কারণে ২০০৪ সালে আমার মেজো ভাইকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে। তবুও ন্যায়ের আশায় লড়াই চালিয়ে গেছি। ভাবতাম—সত্যের জয় একদিন হবেই। আলহামদুলিল্লাহ, আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।”
তবে জমির দখল পাওয়ার পরও নতুন আতঙ্কে দিন কাটছে শফিকুল ইসলামের পরিবারের। তিনি অভিযোগ করে বলেন,
“জমি দখলের পর থেকে বিবাদী পক্ষের ফজলু মণ্ডল (পিতা মৃত আবুল মণ্ডল), ফারুক শাহ (পিতা মৃত খলিল শাহ), রাশেদ সরদার (পিতা মৃত আফজেল সরদার) ও সাইদুল (পিতা মৃত সুভান পরামানিক) আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। আমি ও আমার ওয়ারিশরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
দীর্ঘ ৩১ বছরের বিচারযুদ্ধ শেষে নিজের ন্যায্য জমির দখল পেলেও শফিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবার এখন নিরাপত্তা সংকটে। স্থানীয় জনগণও আশাবাদী—অতি দ্রুত প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।