সিরাজগঞ্জে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা
ঝন্টু, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃসিরাজগঞ্জে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা। এই জেলায় ২৫৫ পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে ড্রাগ ব্যবহারকারী ১৮৭ জন। কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ২৯ জন। সাধারণ ৩৫ ও যৌনকর্মী ৪ জন। প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বাড়েই চলেছে! যেটিই উদ্বেগের কারন।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি সেন্টারের তথ্য মতে, এই রোগ বেশি ছাড়াচ্ছে নিষিদ্ধ নেশা জাতীয় ইনজেকশনের মাধ্যমে, যেটা অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আসছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের পাশাপাশি কাউন্সিলিং করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বলছে, ইনজেকশনে ড্রাগের ব্যবহার কমাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এইচআইভি পজিটিভ রোগী জানান, আমি নিয়মিত ড্রাগ গ্রহন করতাম এবং সেটাও ইনজেকশনের মাধ্যমে। কিভাবে যে আক্রান্ত হয়েছি বুঝতেও পারিনি। মাদকের নেশায় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলতাম। সাধারনত কয়েকজন একসাথে বসে ড্রাগ গ্রহন করতাম। নোংরা বা ব্যবহৃত সিরিঞ্জ সেটা দেখার সময় থাকতো না।
এভাবেই হয়ত কোন সময় এই রোগে আক্রান্ত হয়েছি। আমার মতো অনেকেই এভাবে আক্রান্ত হয়ে তাদের সুন্দর জীবনটা নষ্ট করেছে। এই পথে এসে নিজের জীবন যেমন নষ্ট করেছি তেমনি পরিবারকেও করেছি সর্বশান্ত। এখন পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে বেঁচে আছি! এখন আপসোস হয় কিন্তু কিছু তো আর করার নাই!
সিরাজগঞ্জ হাসপাতালের এআরটি সেন্টারের কাউন্সিলর কাম এ্যাডমিনিস্টেটর মাসুদ রানা জানান, এই জেলায় ২৫৫ পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে এর মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে ড্রাগ ব্যবহারকারী ১৮৭ জন। কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ২৯ জন। সাধারণ ৩৫ ও যৌনকর্মী ৪ জন। সেন্টারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২৬ জন। অনেকে বুঝে আবার অনেকে না বুঝে নেশা জাতীয় এসব ইনজেকশন গ্রহণের সুই বা সিরিঞ্জ একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করায় দ্রুত এইডসের ভাইরাস একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আক্রান্তরা এআরটি সেন্টার থেকে নিয়মিত বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা পেয়ে অনেকটাই ভালো আছে।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার বলেন, সমাজের নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যেই বেশি এইচআইভি পজেটিভ পাওয়া যাচ্ছে। কারন এসব মানুষরাই বেশি ইনজেকটিভ শেয়ারিং করে ব্যবহার করে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি কাউসিলিং করা হচ্ছে যাতে তাদের মনোবল বাড়ে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ইনজেকশনে ড্রাগ ব্যবহার কমাতে আরও কঠোর হতে হবে। সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অবৈধ নেশা বেচাকেনায় জড়িতদের আটকে নিয়মিত অভিযানে পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।








