সন্দ্বীপে এইচএসসি ও সমমানের পরিক্ষায় ফল বিপর্যয় উদ্বেগ শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের
রিয়াদ সন্দ্বীপ(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি:চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে নজিরবিহীন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাসের হার বিপজ্জনকভাবে কমে মাত্র ৩০.১২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই ফলাফল সন্দ্বীপে এইচএসসি পরীক্ষার ইতিহাসে এক ভয়াবহ চিত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১১টায় সারাদেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল প্রকাশিত হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উপজেলার ৬টি কলেজ ও ৩টি ফাজিল মাদ্রাসা থেকে মোট ১,৭৬৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে মাত্র ৫৩১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১৫ জন।
পূর্ববর্তী বছরগুলোর ফলাফলের দিকে তাকালে এই অবনতির মাত্রা স্পষ্ট হয়। ২০২২ সালে যেখানে পাসের হার ছিল ৬৭.১৭ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৬৩.০৪ শতাংশে এবং ২০২৪ সালে তা আরও কমে হয় ৪৮.৩৬ শতাংশ। চলতি বছর সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ৩০.১২ শতাংশে। যদিও জিপিএ-৫ এর সংখ্যা সামান্য বেড়েছে, সামগ্রিক ফলাফল শিক্ষাবিদ, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
উপজেলার কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে সরকারি হাজী আবদুল বাতেন কলেজে ৬৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২৩ জন পাস করেছে, পাসের হার ১৯.১০% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন। মুস্তাফিজুর রহমান ডিগ্রি কলেজে ৩১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, পাসের হার ৩৪.৭৩% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। সাউথ সন্দ্বীপ কলেজে ৩১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৩ জন পাস করেছে, পাসের হার ২৯.৩৪% এবং এই প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ জিপিএ-৫ পায়নি।
উত্তর সন্দ্বীপ কলেজে ২১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭৮ জন পাস করেছে, পাসের হার ৩৫.৭৮% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। মগধরা স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন পাস করেছে, পাসের হার ৪৩.১০% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। আবুল কাশেম হায়দার মহিলা কলেজে ৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, পাসের হার ৩১.১৫% এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ জন। অপরদিকে, সন্দ্বীপ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৫ জন পাস করেছে, পাসের হার সর্বনিম্ন—মাত্র ১২.৫০ শতাংশ এবং কোনো জিপিএ-৫ নেই।
মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে বশিরিয়া আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৩৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৭ জন, কারামিতিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ২৭ জনের মধ্যে ১৯ জন এবং কাটঘর ফাজিল মাদ্রাসায় ৪৭ জনের মধ্যে ৩৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে কাটঘর ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা মনে করছেন, ফলাফলে এই ভয়াবহ অবনতি শিক্ষা ব্যবস্থা ও পরিচালনায় বড় ধরনের ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়। তাদের মতে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এই ফল বিপর্যয় আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।








