ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতি এখন রঙিন। শিমুল গাছ এখন বিলুপ্তির পথে
নিজেস্ব প্রতিবেদক দৈানক আমাদের স্বদেশ: সিরাজগঞ্জের গ্রাম বাংলা সেজেছে প্রকৃতির অপরূপ সাজে। গাছে গাছে সবুজ পাতা, মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বুঝে নিতে হবে শীত বিদায় নিয়ে চলে এলেছে বসন্ত কাল। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে তুলেছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল সাথে কোকিলের সুমিষ্ট কুহুডাক। গাছে গাছে প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিতে এসেছে বসন্ত। তবে কালের বিবর্তনে ফাগুনে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন বিলুপ্ত প্রায়।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গ্রামগুলো বাংলায় এর ব্যতিক্রম নয়। সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তায়, পতিত ভিটায় মাত্র এক যুগ আগেও দেখা যেত প্রচুর শিমুল গাছ। প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম প্রধান অবলম্বন শিমুল গাছ। জানা যায়, এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ। শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে উড়তে থাকে তুলা। তুলার সাথে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই জন্ম নেয় নতুন গাছ। সাধারনত শখ করে অন্যান্য গাছের মত এ গাছ কেউ রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোন যতœ। গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইট ভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছোট ডিঙ্গি নৌকা তৈরীতে শিমুল কাঠের বিকল্প নেই। শিমুল গাছ এত প্রয়োজনীয় হওয়া সর্তেও সেই তুলনায় এই গাছ রোপণ করা হয়নি। ফলে বিলুপ্তির পথে আজ শিমুল গাছ। সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার প্রবীণ ব্যক্তি তছিরন (১০১) বলেন, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল। এখন আর দেখা যায় না।
শিমুলগাছ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না। এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এর তুলা খুবই ভাল, এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝতো। তিনি আরও বলেন, আমরা তুলা চাষ বৃদ্ধির জন্য স্বল্প আকারে হলেও তুলা গাছের চারা তৈরি করে জনগণের মাঝে বিতরণ করে থাকি।








