সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ, চাচা-ফুফুদের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে থানায় জিডি
ঝন্টু, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃসিরাজগঞ্জের তাড়াশে পৈতৃক সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তিকে তার চাচা ও ফুফুরা মিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মোঃ শামসুজ্জোহা নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ১২ জনকে বিবাদী করে তাড়াশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এই ঘটনায় পুরো পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হালিম খন্দকারের ছেলে মোঃ শামসুজ্জোহা তার শৈশবে বাবাকে হারান। এরপর থেকে তার বাবার রেখে যাওয়া সকল সম্পত্তি তার চাচা-ফুফুরা ভোগদখল করে আসছিলেন। সম্প্রতি শামসুজ্জোহা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ চাইলে, তাকে তার দাদার সম্পত্তির অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হলেও বাবার ক্রয়কৃত ১০১ শতক জমি দিতে অস্বীকার করা হয়। ভুক্তভোগী শামসুজ্জোহা জানান, তিনি কুন্দইল ভূমি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, মাঝিড়া মৌজার আরএস ২৬৯ নং খতিয়ানের ৫৭৩ নং দাগের জমিটি আইনত তার বাবার নামেই নামজারি করা আছে। এই তথ্য চাচা-ফুফুদের জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং জমি ফেরত দেওয়ার বদলে তাকে নানাভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন তার চাচা জসিম উদ্দিন প্রতারণার মাধ্যমে একটি ভুয়া দলিল তৈরি করে সেই জমি নিজের নামে নামজারি করিয়ে নেন। পরবর্তীতে শামসুজ্জোহা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দপ্তরে আপিল করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত জসিম উদ্দিনের প্রতারণামূলক নামজারি বাতিল করে দেন এবং জমির আইনগত মালিক হিসেবে শামসুজ্জোহা ও তার ভাইয়ের নামে নতুন নামজারির আদেশ দেন। এই আদেশের পর অভিযুক্তরা আরও হিংস্র হয়ে ওঠেন বলে শামসুজ্জোহা তার অভিযোগে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে এবং হুমকি দিয়ে বলেছে, জমিতে নামলে আমার লাশ তিন টুকরো করে ফেলে রাখা হবে।” অভিযোগে আরও বলা হয়, মোঃ শহিদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বক ওই জমিতে হালচাষ করছেন এবং তিনিও তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। শামসুজ্জোহা আরও বলেন, “আগামী ২০ অক্টোবর আমি আমার জমি পরিমাপ করতে যেতে চাই, কিন্তু তাদের হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আমার বাবার শেষ স্মৃতিটুকু রক্ষা করতে এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, “অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।








