বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর—মাগুরায় যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার ধামরাইয়ে ৬৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা হরিনাকুন্ডুতে মহান বিজয় দিবস উদযাপন। জাতীয় পার্টি নেতার পিস ইমরান ধারালো অস্ত্রের হামলায় নারীসহ একই পরিবারের ৩ জন গুরুতর আহত এমপির পিয়নের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, বরিশাল-৩ এলাকায় তোলপাড় বাংলাদেশ চালক সংগঠন গ্রুপের উদ্যোগে কর্মীসভা ও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত মোস্তফা কামাল পাশার পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজিবির শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র ও খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণ। ভেড়ামারা উপজেলা ইটভাটা মালিক ও শ্রমিকরা দিশেহারা তাড়াশে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল

এমপির পিয়নের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, বরিশাল-৩ এলাকায় তোলপাড়

প্রতিবেদকের নাম / ৭ বার দেখা হয়েছে
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল : প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের পর এবার আরেক পিয়নকে ঘিরে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে। বরিশাল-৩ (মুলাদী–বাবুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কিবরিয়া টিপুর পিয়ন ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকায় ফ্ল্যাট, গাড়ি এবং ব্যাংকে কোটি টাকার সম্পদের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমপির এপিএস পরিচয় ব্যবহার করে গভীর নলকূপ, টিআর, কাবিখা ও কাবিটা বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ইমরান হোসেন বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের চরউত্তর গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেছার হাওলাদারের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বরিশাল-৩ আসনের এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপুর ঢাকার অফিসে পিয়ন হিসেবে কর্মরত।
সরকারি সুবিধা আত্মসাৎ ও অনিয়মের অভিযোগ
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইমরানের বিরুদ্ধে গরিবদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ঘর নিজের গরুর গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহার, রাস্তার জন্য বরাদ্দকৃত স্ট্রিট লাইট নিজের গোয়ালঘরের পাশে স্থাপন, পরিবারের সদস্যদের নামে সরকারি বরাদ্দ নেওয়া এবং প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা আত্মসাতের মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কৃষি অফিস থেকে মাড়াই যন্ত্র, পাওয়ার টিলারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
আরও অভিযোগ রয়েছে, বিগত সংসদের সময় মুলাদী ও বাবুগঞ্জ উপজেলার কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে গভীর নলকূপ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে।
কাবিখা–টিআর প্রকল্পে অনিয়ম স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ কাবিখা ও টিআর প্রকল্পের আওতায় বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের চরহোগলপাতিয়া কবরস্থানে মাটি ভরাটের কথা দেখিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ নেন ইমরান। একই প্রকল্পে গত ১৮ মে আরও ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ নেওয়া হলেও বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। বরাদ্দের পুরো অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি।
কোটি টাকার সম্পদ ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ
অভিযোগ অনুযায়ী, এমপির অফিসের পিয়নের চাকরি করেই ইমরান ঢাকায় কোটি টাকার বেশি মূল্যের ফ্ল্যাট কিনেছেন, গাড়ির মালিক হয়েছেন এবং ব্যাংকে রয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা। এমপির এপিএস পরিচয়ে তিনি এক চিকিৎসকের মেয়েকে বিয়েও করেছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির এক নেতা বলেন, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ইমরান একজন করে দালাল নিয়োগ করেছেন। তাদের মাধ্যমে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও নলকূপের নামে টাকা সংগ্রহ করা হয়। বরাদ্দ তালিকায় তার সুপারিশপ্রাপ্তদের নামই বেশি থাকে।
চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপুর একটি ডিও লেটারে বাবুগঞ্জ উপজেলায় গরিবদের জন্য ঐচ্ছিক তহবিল থেকে ৭৫ হাজার টাকার বরাদ্দের তালিকায় ইমরানের মা, বাবা, ভাই ও ভাগিনার নামে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ৬ মে ও ২৬ মে তারিখের দুটি ডিও লেটারে ৫০ বান টিন বরাদ্দের আবেদনে ইমরানের পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামে ১৮ বান টিনের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কৃষি অফিসের মাড়াই মেশিন, পাম্প ও ট্রাক্টর বরাদ্দের বড় অংশও তার মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাবুগঞ্জ উপজেলার এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, “এমপি সৎ মানুষ। কিন্তু তার অফিসের পিয়ন ইমরান প্রায়ই এমপির নাম ব্যবহার করে ফোনে সুপারিশ করেন। তার বাবা ও ভাইয়ের নামে বরাদ্দ পাওয়া টিআর-কাবিখার কাজ না করেই বিল তুলতে আসেন। না দিলে এমপি মহোদয়ের ভয় দেখান।”
বিষয়টি সম্পর্কে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “আমার বাবা মারা গেছেন। ইমরানের বিষয়ে পরে কথা বলবো।”
এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপুর এপিএস ফয়জুল ইসলাম বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। ইমরানের বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।”
সব অভিযোগ অস্বীকার করে ইমরান হোসেন নিজেকে এপিএস দাবি করে বলেন, “গভীর নলকূপ, টিআর, কাবিখা বা কাবিটা দেওয়ার কথা বলে কোনো টাকা নিইনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর