দুর্গাপূজায় নারকেলের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে
ঝন্টু, তাড়াশ প্রতিনিধিঃ দুর্গাপূজায় নারকেলের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে গেছে। আর পূজায় নাড়ু, মোয়া, পায়েস, সন্দেশসহ নানা রকম মিষ্টিজাতীয় খাবার বানানো হয়। যার প্রস্তুতি চলছে গ্রামে গ্রামে পাড়া মহল্লায়। পুজার অন্যতম অনুসঙ্গ পুজা কালে সংকল্প ও নাড়ু তৈরির প্রধান উপকরণ নারকেল কেনার তোরজোড় ও নাড়ু তৈরি করার বার্ষিকী আয়োজন।
মুলতঃ নারকেল পুজার আগেই উচ্চবিত্ত থেকে নিন্মবিত্ত সবাই কম বেশি কেনেন। যেহেতু মন্দিরে পূজার আচারে নারকেলের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে নারকেলের চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এ সুযোগে বাজারে এটির দামও বেড়ে যায়। গত এক সপ্তাহেরর ব্যবধানে চলনবিল অঞ্চলে সব ধরনের নারকেলের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারে প্রতি জোড়া ছোট, মাঝারি, বড় আকারের সকল নারকেল প্রকার ভেদে জোড়ায় বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, তাড়াশ পৌর শহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে থরে থরে সাজিয়ে রাখা নারকেল। নারকেলের চড়া দাম শুনে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। চাহিদা বাড়ার সাথে বেড়েছে দামও। কদিন আগেও এক জোড়া নারকেলের দাম ছিল আকারভেদে ১৬০-২০০ টাকা। সেই নারকেল এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা জোড়া। সে অনুযায়ী, প্রতি জোড়া নারকেলে দাম বেড়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। চলনবিলের নারেকেলের জন্য প্রসিদ্ধ হাট ও বাজারে চান্দাইকোনা, সাইকোরা, কাছিকাটা, নওগাঁ, মীর্জাপুর, হান্ডিয়াল, শরৎ নগর, চাঁচকৈড়, সলঙ্গা, গুল্টা, বিনসাড়াসহ বিভিন্ন হাট বাজারে গত ৭ দিনের ব্যবধানে বড় আকারের প্রতি জোড়া বড় নারকেল বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকার স্থলে জোড়ার ৩৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের নারকেল বিক্রি হচ্ছে ২৩০ স্থলে ৩০০ টাকায়। ছোট আকারের প্রতি জোড়া নারকেল বিক্রি হয়েছে ১৬০ স্থলে ২২০ টাকায়।
নারকেল কিনতে আসা উত্তম জানান, গত এক সপ্তাহ আগে নারকেলের এত দাম ছিলনা। মাত্র কযেকদিনের ব্যবধানে নারকেলে দাম বাড়ায় মনে হচ্ছে, নারকেলে হাত দিলেই দামের উত্তাপে হাত ঝলসে যাবে।
এ দিকে তাড়াশে বাজারের নারকেল বিক্রেতা আরশেদ আলী বলেন, নারকেলের দাম বর্তমানে চলনবিলাঞ্চলে বেশ চড়া। এর কারণ এলাকায় তুলনামূলক নারকেলের গাছ কম। নারকেলের ফলনও বর্তমান সময়ে কম। আগে আমরা এলাকার চাঁচকৈড়, সলঙ্গা, মীর্জাপুর, হান্ডিয়াল, শরৎ নগর সাপ্তাহিক হাটসহ এলাকার বিভিন্ন মোকাম থেকে পাইকারি দরে নারকেল কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন চলনবিল এলাকায় পাবনা, নাটোর, রাজশাহী অঞ্চল থেকে কিছু নারকেল এলও তা পাইকারি ব্যবসায়িদের চাহিদার চেয়ে কম। তাই বিকল্প ভাবে গড়ে ওঠা বগুড়ার শেরপুর থেকে আমরা এখন বেশির ভাগ খুচরা নারকেল ব্যবসায়ি নারকেল কিনছি। আর শেরপুরের সকল নারকেল আসছে উপকুলের জেলা, বাগের হাট, পটুয়াখালী, ভোলা জেলাসহ আশে পাশের অঞ্চল থেকে।
আবার উপকুলের জেলাসহ আশে পাশের অঞ্চল থেকে নারকেল কেনা বগুড়ার শেরপুরের মহাজন নারায়ণচন্দ্র জানান, আমরাও গত বছরের থেকে পূজার বাজারে ওই অঞ্চল থেকে প্রতি পিছ নারকেল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনছি। যে কারণে আমরাও পাইকারি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়ে দাম বাড়িয়েছি। পাশাপাশি আমাদের কাছ থেকে যারা খুচরা বিক্রেতা কিনে নিয়ে এলাকায় বিক্রি করছেন তারাও দাম বাড়িছেন।
দূর্গা পুজা তো বছরে একবারই আসে। আর অতিথি অপ্যায়নে বাঙালি সনাতন পরিবারে পুজা কালে নাড়ু, মুড়ি, খই ছাড়া ভাবা যায়! তাই নারকেলের দাম যাই বাড়ুক বেশি কিনতে না পারলেও কিছু তো কিনতেই হবে।








